ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে নববর্ষ উদযাপনে : মুসলিমদের করণীয়
👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉❤👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈
⇛বাংলা নববর্ষ ‘পহেলা বৈশাখ’, ইংরেজি নববর্ষ ‘থার্টিফাস্ট’ কিংবা হিজরি নববর্ষ পালন করা হারাম।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী:
“যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে সামঞ্জস্য রাখল সে তাদের অন্তর্ভুক্ত”। [আবু দাউদ: (৩৫১৪)]
নববর্ষ, বর্ষবরণ, পহেলা বৈশাখ— এ শব্দগুলো বাংলা নতুন বছরের আগমন এবং এ উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব-অনুষ্ঠানাদিকে ইঙ্গিত করে। এই উৎসবকে প্রচার মাধ্যমসমূহে বাঙালির ঐতিহ্য হিসেবে রঞ্জিত করা হয়ে থাকে। তাই জাতিগত একটি ঐতিহ্য হিসেবে এই উৎসবকে এবং এর সাথে সম্পৃক্ত কর্মকাণ্ডকে সমর্থন যোগানোর একটা বাধ্যবাধকতা অনুভূত হয় সবার মনেই - এ যে বাঙালি জাতির উৎসব! তবে বাংলাদেশে বসবাসরত বাঙালি জাতির শতকরা ৮৭ ভাগ লোক আবার মুসলিমও বটে, তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে: নববর্ষ উদযাপন এবং সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠানাদি যেমন: রবীন্দ্রসংগীতের মাধ্যমে বর্ষবরণ, বৈশাখী মেলা,রমনার বটমূলে পান্তা-ইলিশের ভোজ, জীবজন্তু ও রাক্ষস-খোক্কসের প্রতিকৃতি নিয়ে গণমিছিল - এবং এতদুপলক্ষে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা, হাসি-ঠাট্টা ও আনন্দ উপভোগ, সাজগোজ করে নারীদের অবাধ বিচরণ ও সৌন্দর্যের প্রদর্শনী, সহপাঠী সহপাঠিনীদের একে অপরের দেহে চিত্রাংকন - এসবকিছু কতটা ইসলাম সম্মত? ৮৭ ভাগ মুসলিম যে আল্লাহতে বিশ্বাসী, সেই আল্লাহ কি মুসলিমদের এই সকল আচরণে আনন্দ-আপ্লুত হন, না ক্রোধান্বিত হন? নববর্ষকে সামনে রেখে এই নিবন্ধে এই বিষয়টি আলোচিত হয়েছে।
আল্লাহ তা'আলা বলছেন,
“হে মুমিনগণ, ইহুদি ও নাসারাদেরকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে নিশ্চয় তাদেরই একজন। নিশ্চয় আল্লাহ জালিম কওমকে হিদায়াত দেন না”। [সূরা মায়েদা: (৫১)]
⇛ইসলাম ধর্মে উৎসবের রূপরেখা
👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉❤👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈
প্রিয় পাঠক, আমাদেরকে ইসলামে স্বীকৃত উৎসব তথা ঈদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের ঈদ একটি ইবাদত, যার দ্বারা আমরা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করি। এ ঈদের সংখ্যা তিনটি, চতুর্থ কোন ঈদ নেই। জুমা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আদহা। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি:
“নিশ্চয় জুমার দিন ঈদের দিন, অতএব তোমাদের ঈদের দিনকে তোমরা সিয়ামের দিন বানিয়ো না, তবে তার পূর্বে কিংবা পরে যদি সিয়াম রাখ, তাহলে পার”। [আহমদ: (৭৮২৫), সহি ইব্ন খুজাইমাহ: (২১৫৫), হাকেম: (১৬৩০)]
আমরা চিন্তা করেছি কিংবা ভেবে দেখেছি যে, নববর্ষের শুরুতে যখন বলি, যাকেই বলি: “শুভ নববর্ষ”, কিংবা “হ্যাপি নিউ ইয়ার”? কার অনুসরণ করছি, কাকে বলছি ও কি বলছি? নিশ্চয় আমরা চিন্তা করিনি, চিন্তা করলে কখনো আমাদের বিবেক
সায় দিত না কুফরি কথার পক্ষে, কিংবা তাদের শুভেচ্ছা জানানোর প্রতি। অমুসলিমদের উৎসব-অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া আর তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। এই উৎসব-অনুষ্ঠানের সাথে একমত পোষণ করা অর্থ কুফরের সাথে একমত পোষণ করা। আর এসবের একাংশের সাথে একমত পোষণ করা অর্থ কুফরের শাখাবিশেষের সাথে একমত হওয়া। উৎসব-অনুষ্ঠানাদি স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের অধিকারী যার দ্বারা ধর্মগুলোকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যায়।...নিঃসন্দেহে তাদের সাথে এসব অনুষ্ঠান পালনে যোগ দেয়া একজনকে কুফরের দিকে নিয়ে যেতে পারে। আর বাহ্যিকভাবে এগুলোতে অংশ নেয়া নিঃসন্দেহে পাপ।
আমরা বছরের অন্যান্য দিনের ন্যায় নববর্ষের দিনকে গণ্য করব। এতে কোন ধরণের অনুষ্ঠান করব না ও তাতে অংশ নেব না। আমাদের সন্তানদের প্রতি গভীর দৃষ্টি রাখব, যেন তারা বিজাতীয় উৎসবে অংশ গ্রহণ না করে।সন্তান কিংবা পরিবারের কোন সদস্যের আবদার রক্ষার্থে আল্লাহর নির্দেশ উপেক্ষা করে তাদের উৎসব উদযাপন করা যাবে না।
কুরআনে আল্লাহ ঘোষণা দিচ্ছেন:
“আমি জ্বিন ও মানুষকে আমার ইবাদত করা ছাড়া অন্য কোন কারণে সৃষ্টি করিনি।” (সূরা আয যারিয়াত, ৫১:৫৬)
⇛নতুন বছরের সাথে মানুষের কল্যাণের সম্পর্ক:
👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉❤👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈
নতুন বছর নতুন কল্যাণ বয়ে আনে, দূরীভূত হয় পুরোনো কষ্ট ও ব্যর্থতার গ্লানি - এধরনের কোন তত্ত্ব ইসলামে আদৌ সমর্থিত নয়, বরং নতুন বছরের সাথে কল্যাণের শুভাগমনের ধারণা আদিযুগের প্রকৃতি-পুজারী মানুষের কুসংস্কারাচ্ছন্ন ধ্যান-ধারণার অবশিষ্টাংশ। ইসলামে এ ধরনের কুসংস্কারের কোন স্থান নেই। বরং মুসলিমের জীবনে প্রতিটি মুহূর্তই পরম মূল্যবান হীরকখন্ড, হয় সে এই মুহূর্তকে আল্লাহর আনুগত্যে ব্যয় করে আখিরাতের পাথেয় সঞ্চয় করবে,নতুবা আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত হয়ে শাস্তির যোগ্য হয়ে উঠবে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে বছরের প্রথম দিনের কোন বিশেষ তাৎপর্য নেই। আর তাই তো ইসলামে হিজরী নববর্ষ পালনের কোন প্রকার নির্দেশ দেয়া হয়নি। না কুরআনে এর কোন নির্দেশ এসেছে, না হাদীসে এর প্রতি কোন উৎসাহ দেয়া হয়েছে, না সাহাবীগণ এরূপ কোন উপলক্ষ পালন করেছেন। এমনকি পয়লা মুহাররামকে নববর্ষের সূচনা হিসেবে গণনা করা শুরুই হয় নবীর (সা.) মৃত্যুর বহু পরে উমার ইবনুল খাত্তাবের (রা.) শাসন আমলে। এ থেকে বোঝা যায় যে, নববর্ষ ইসলামের দৃষ্টিতে কতটা তাৎপর্যহীন, এর সাথে জীবনে কল্যাণ-অকল্যাণের গতিপ্রবাহের কোন দূরতম সম্পর্কও নেই, আর সেক্ষেত্রে বাংলা নববর্ষের কিই বা তাৎপর্য থাকতে পারে ইসলামে?
কেউ যদি এই ধারণা পোষণ করে যে, নববর্ষের প্রারম্ভের সাথে কল্যাণের কোন সম্পর্ক রয়েছে, তবে সে শিরকে লিপ্ত হল, অর্থাৎ আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থির করল। যদি সে মনে করে যে, আল্লাহ এই উপলক্ষ দ্বারা মানবজীবনে কল্যাণ বর্ষণ করেন, তবে সে ছোট শিরকে লিপ্ত হল। আর কেউ যদি মনে করে যে নববর্ষের আগমনের এই ক্ষণটি নিজে থেকেই কোন কল্যাণের অধিকারী, তবে সে বড় শিরকে লিপ্ত হল, যা তাকে ইসলামের গন্ডীর বাইরে নিয়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই শিরক এমন অপরাধ যে, শিরকের ওপর কোন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে চিরতরে হারাম করে দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন:
“নিশ্চয়ই যে কেউই আল্লাহর অংশীদার স্থির করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন, আর তার বাসস্থান হবে অগ্নি। এবং যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই।” (আল-মায়িদাহ, ৫:৭২)
বাংলা নববর্ষ উদযাপনের সাথে মঙ্গলময়তার এই ধারণার সম্পর্ক রয়েছে বলে কোন কোন সূত্রে দাবী করা হয় , যা কিনা অত্যন্ত দুশ্চিন্তার বিষয়। মুসলিমদেরকে এ ধরনের কুসংস্কার ঝেড়ে ফেলে ইসলামের যে মূলতত্ত্ব সেই তাওহীদ বা একত্ববাদের ওপর পরিপূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।
⇛নববর্ষের অনুষ্ঠানাদি: শয়তানের পুরোনো কূটচালের নবায়ন
👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉❤👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈
আমাদের সমাজে নববর্ষ যারা পালন করে, তারা কি ধরনের অনুষ্ঠান সেখানে পালন করে, আর সেগুলো সম্পর্কে ইসলামের বক্তব্য কি? নববর্ষের অনুষ্ঠানাদির মধ্যে রয়েছে: বৈশাখী মেলা, যাত্রা, পালাগান, কবিগান, জারিগান, গম্ভীরা গান প্রভৃতি বিভিন্ন লোকসঙ্গীতের ব্যবস্থা, প্রভাতে উদীয়মান সূর্যকে স্বাগত জানান, নতুন সূর্যকে প্রত্যক্ষকরণ, নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে শিল্পীদের সংগীত, পান্তা-ইলিশ ভোজ, চারুশিল্পীদের শোভাযাত্রা, রমনার বটমূলে ছায়ানটের উদ্যোগে রবীন্দ্রনাথের আগমনী গান “এসো হে বৈশাখ...”, এছাড়া রেডিও টিভিতে বিশেষ অনুষ্ঠান ও পত্রপত্রিকার বিশেষ ক্রোড়পত্র।
⇛এবারে এ সকল অনুষ্ঠানাদিতে অনুষ্ঠিত মূল কর্মকান্ড এবং ইসলামে এগুলোর অবস্থান সম্পর্কে পর্যালোচনা করা যাক⇐
⇛সূর্যকে স্বাগত জানানো ও বৈশাখকে সম্বোধন করে স্বাগত জানানো:
👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉❤👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈
এ ধরনের কর্মকান্ড মূলত সূর্য-পূজারী ও প্রকৃতি-পূজারী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অনুকরণ মাত্র, যা আধুনিক মানুষের দৃষ্টিতে পুনরায় শোভনীয় হয়ে উঠেছে।
শয়তানের এই কূটচালের বর্ণনা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা কুরআনে তুলে ধরেছেন:
“আমি তাকে ও তার জাতিকে দেখেছি, তারা আল্লাহকে ছেড়ে সূর্যকে সিজদা করছে এবং শয়তান তাদের কার্যাবলীকে তাদের জন্য শোভনীয় করেছে...” (সূরা আল নামল, ২৭:২৪)
আজকের বাংলা নববর্ষ উদযাপনে গান গেয়ে বৈশাখী সূর্যকে স্বাগত জানানো, আর কুরআনে বর্ণিত প্রাচীন জাতির সূর্যকে সিজদা করা, আর উত্তর আমেরিকার আদিবাসীদের সৌর-নৃত্য - এগুলোর মধ্যে চেতনাগত কোন পার্থক্য নেই, বরং এ সবই স্রষ্টার দিক থেকে মানুষকে অমনোযোগী করে সৃষ্টির আরাধনার প্রতি তার আকর্ষণ জাগিয়ে তোলার শয়তানী উদ্যোগ।
⇛নববর্ষে মুখোশ নৃত্য, গম্ভীরা গান ও জীবজন্তুর প্রতিকৃতি নিয়ে মিছিল:
👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉❤👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈
গম্ভীরা উৎসবের যে মুখোশ নৃত্য, তার উৎস হচ্ছে কোচ নৃগোষ্ঠীর প্রাচীন কৃত্যানুষ্ঠান এবং পরবর্তীতে ভারতীয় তান্ত্রিক বৌদ্ধগণ এই নৃত্য আত্তীকরণ করে নিজস্ব সংস্করণ তৈরী করে। জন্তু-পূজার উৎস পাওয়া যাবে প্রাচীন গ্রীক ও রোমান সভ্যতার কিছু ধর্মীয় মতবাদে, যেখানে দেবতাদেরকে জন্তুর প্রতিকৃতিতে উপস্থাপন করা হয়েছে। এমনিভাবে নববর্ষের কিছু অনুষ্ঠানে প্রাচীন পৌত্তলিক ধর্মীয় মতবাদের ছোঁয়া লেগেছে, যা যথারীতি ইসলামবিদ্বেষীদের নিকট অত্যন্ত পছন্দনীয়, এগুলো তাদের আধ্যাত্মিক আবেগ-অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর জন্য সত্য ধর্মের বিকল্প এক বিকৃত পথ মাত্র। ইসলামের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সকল প্রকার মিথ্যা দেবতার অবসান ঘটিয়ে একমাত্র প্রকৃত ইলাহ, মানুষের স্রষ্টা আল্লাহর ইবাদাতকে প্রতিষ্ঠিত করা, যেন মানুষের সকল ভক্তি, ভালবাসা, ভয় ও আবেগের কেন্দ্রস্থলে তিনি আসীন থাকেন। অপরদিকে শয়তানের ষড়যন্ত্র হচ্ছে বিবিধ প্রতিকৃতির দ্বারা মানুষকে মূল পালনকর্তার ইবাদত থেকে বিচ্যুত করা। আর তাই তো ইসলামে প্রতিকৃতি কিংবা জীবন্ত বস্তুর ছবি তৈরী করাকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত যে রাসূলুল্লাহ(সা.) বলেছেন:
“কিয়ামতের দিন সবচেয়ে কঠিন শাস্তি ভোগ করবে [জীবন্ত বস্তুর] ছবি তৈরীকারীরা।” [বুখারী: ৫৯৫০; মুসলিম: ২১০৯]
ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদীস থেকে জানা যায়, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“যে কেউই ছবি তৈরী করল, আল্লাহ তাকে [কিয়ামতের দিন] ততক্ষণ শাস্তি দিতে থাকবেন যতক্ষণ না সে এতে প্রাণ সঞ্চার করে, আর সে কখনোই তা করতে সমর্থ হবে না।” [বুখারী:২২২৫; মুসলিম: ২১১০]
⇛নারীকে জড়িয়ে বিভিন্ন অশ্লীলতা:
👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉❤👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈
শিরকপূর্ণ আচার-অনুষ্ঠানের পরেই নববর্ষের অনুষ্ঠানাদির মধ্যে সমাজ-বিধ্বংসী যে বিষয়গুলো পাওয়া যাবে, তা হচ্ছে নারীকে জড়িয়ে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীলতা। বৈশাখী মেলা, রমনার বটমূল, চারুকলার মিছিল, এর সবর্ত্রই সৌন্দর্য প্রদর্শনকারী নারীকে পুরুষের সাথে অবাধ মেলামেশায় লিপ্ত দেখা যাবে। পৃথিবীতে আল্লাহ মানুষকে যে সকল আকষর্ণীয় বস্তু দ্বারা পরীক্ষা করে থাকেন, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নারী। রাসূলুল্লাহ(সা.) বলেন:
“আমি পুরুষের জন্য নারীর চেয়ে বড় কোন ফিতনা রেখে যাচ্ছি না।” [বুখারী: ৫০৯৬; মুসলিম:২৭৪০]
“তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না। অবশ্যই এটা অশ্লীল কাজ ও নিকৃষ্ট পন্থা।” (সূরা আল ইসরা, ১৭:৩২)
ব্যভিচারকে উৎসাহিত করে এমন বিষয়, পরিবেশ, কথা ও কাজ এই আয়াত দ্বারা নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে।
বিভিন্ন সাজে সজ্জিত পর্দাবিহীন নারীকে আকর্ষণীয়, প্রগতিশীল, আধুনিক ও অভিজাত বলে মনে হতে পারে, কেননা, শয়তান পাপকাজকে মানুষের দৃষ্টিতে শোভনীয় করে তোলে।
এ সকল কিছু রোধ করার জন্য ইসলামে নারীদেরকে পর্দা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, নারী ও পুরুষের বিচরণ ক্ষেত্র পৃথক করা এবং দৃষ্টি অবনত রাখার বিধান রাখা হয়েছে।
⇛সঙ্গীত ও বাদ্য:
👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉👉❤👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈👈
নববর্ষের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সাথে জড়িত থাকে সংগীত ও বাদ্য। ইসলামে নারীকন্ঠে সংগীত নিঃসন্দেহে নিষিদ্ধ। সাধারণভাবে যেকোন বাদ্যযন্ত্রকেও ইসলামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, বিশেষ ব্যতিক্রম ছাড়া, যেমন বিশেষ কিছু উপলক্ষে দফ নামক বাদ্যযন্ত্র বাজানোর অনুমতি হাদীসে এসেছে। তাই যে সকল স্থানে এসব হারাম সংগীত উপস্থাপিত হয়, যেমন রমনার বটমূল, বৈশাখী মেলা এবং নববর্ষের অন্যান্য অনুষ্ঠানাদি, সে সকল স্থানে যাওয়া, এগুলোতে অংশ নেয়া, এগুলোতে কোন ধরনের সহায়তা করা কিংবা তা দেখা বা শোনা সকল মুসলিমের জন্য হারাম। কিন্তু কোন মুসলিম যদি এতে উপস্থিত থাকার ফলে সেখানে সংঘটিত এইসকল পাপাচারকে বন্ধ করতে সমর্থ হয়, তবে তার জন্য সেটা অনুমোদনযোগ্য। তাছাড়া অনর্থক কথা ও গল্প-কাহিনী যা মানুষকে জীবনের মূল লক্ষ্য থেকে দূরে সরিয়ে রাখে, তা নিঃসন্দেহে মুসলিমের জন্য বর্জনীয়। অনর্থক কথা, বানোয়াট গল্প-কাহিনী এবং গান-বাজনা মানুষকে জীবনের মূল লক্ষ্য থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য শয়তানের পুরোনো কূটচালের একটি, আল্লাহ এ কথা কুরআনে স্পষ্ট করে দিয়েছেন:
“এবং তাদের মধ্যে যাদেরকে পার পর্যায়ক্রমে বোকা বানাও তোমার গলার স্বরের সাহায্যে, ... ” (সূরা আল ইসরা, ১৭:৬৪)
যে কোন আওয়াজ, যা আল্লাহর অবাধ্যতার দিকে আহবান জানায়, তার সবই এই আয়াতে বর্ণিত আওয়াজের অন্তর্ভুক্ত। (তফসীর ইবন কাসীর)
⇛আল্লাহ আরও বলেন:
“এবং মানুষের মাঝে এমন কিছু লোক আছে যারা আল্লাহর পথ থেকে [মানুষকে] বিচ্যুত করার জন্য কোন জ্ঞান ছাড়াই অনর্থক কথাকে ক্রয় করে,এবং একে ঠাট্টা হিসেবে গ্রহণ করে, এদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।” (সূরা লুকমান, ৩১:৬)
রাসূলুল্লাহ(সা.) বলেছেন:
“আমার উম্মাতের মধ্যে কিছু লোক হবে যারা ব্যভিচার, রেশমী বস্ত্র, মদ এবং বাদ্যযন্ত্রকে হালাল বলে জ্ঞান করবে।” [বুখারী:৫৫৯০]
আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর আনুগত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকার তাওফীক দান করুন, এবং কল্যাণ ও শান্তি বর্ষিত হোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওপর, তাঁর পরিবার ও সাহাবীগণের ওপর।
“আর তোমরা তোমাদের রবের ক্ষমা ও সেই জান্নাতের দিকে দ্রুত ধাবিত হও, যার পরিধি আসমান ও যমীনব্যাপী, যা প্রস্তুত করা হয়েছে আল্লাহভীরুদের জন্য।” (সূরা আলে-ইমরান, ৩:১৩৩)।
No comments:
Post a Comment